ইতিহাস ও ঐতিহ্য


মণিষী সমৃদ্ধ ফটিকছড়িঃ

সুজলা-সুফলা নয়নাভিরাম বাংলার একটি ঐতিহ্য সমৃদ্ধ জনপদ ফটিকছড়িপাহাড়, নদী আর সমতলের সংমিশ্রনে উর্বর এই জনপদে অন্ধকার অন্তরীক্ষে প্রোজ্জল জ্যোতিষ্কের মত এখন কিছু ব্যক্তিক্রম ব্যক্তিত্বের আর্বিভাব ঘটে, যারা মরেও চিরদিন অমর হয়ে থাকবেকেউ বিজ্ঞান আবার কেউ সমাজ সেবায়, কেউবা ন্রায়-বিচার প্রতিষ্ঠায় জাতির প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেননানাভাবে ফটিকছড়িকে কলঙ্কিত করা হলেও অন্ধকারে আলোর দিশারীর মত বাংলাদেশের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করে ফটিকছড়ির এ সকল সূর্য সন্তানদের অবদান অপরিসীম|
পরলোকগত এ সকল উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব ফটিকছড়ির গণমানুষের গর্বের ধনআসুন আমরা তাদের স্মৃতিকে চারিত করে বর্তমান প্রজন্মকে জীবন গঠনে অনুপ্রাণিত করি

লেখক খালেদা হানুম (জন্ম ১৯৪০)ঃ 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর বহুমাত্রিক লেখক খালেদা হানুম (জন্ম ১৯৪০) ফটিকছড়ি নানুপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের জন্মগ্রহণ করেনতার পিতাও ছিলেন তৎকালীন পোষ্টমাষ্টার জেনারেলতিনি বেশ কয়েকটি গ্রন্থের প্রণেতাতাঁর অন্যতম গবেষণা বাংলাদেশে ছোট কালের মূল্যায়ন ১৯৪৭-১৯৭০লেখালেখির ক্ষেত্রে এখনো সক্রিয় অধ্যাপক খালেদা হানুম

সালমা চৌধুরী (১৯৪১-২০০২)ঃ

সালমা চৌধুরী (১৯৪১-২০০২) একজন সমাজসেবক, দক্ষ সংগঠক, শিক্ষাবিদ ছাড়াও সৃজনী প্রতিভার অধিকারী ছিলেনতাঁর বেশ কটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছেফটিকছড়ির এই কৃতি মহিলা ছিলেন ড. মুহাম্মদ এনামুল হকের যোগ্য কন্যা

সব্যসাচী রফিক আনোয়ার (১৯৪২)ঃ

সরকারী কর্মকর্তা থেকে অবসরপ্রাপ্ত সব্যসাচী রফিক আনোয়ার (১৯৪২) নানুপুরের সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেনষাট এবং সত্তর দশকে চট্টগ্রামের শিল্প-সাহিত্যের ক্ষেত্রে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেনমাঝপথে থমকে দাঁড়ালেও আবার গতিতে ফিরে আসেউপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক ও স্মৃতিকথা মিলে তার প্রকাশিত গ্রন্থ পনের এর অধিকএখনো তিনি লেখালেখির ক্ষেত্রে সক্রিয়া আছেন

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শামসুল আলম (জন্ম-১৯৪৩)ঃ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শামসুল আলম (জন্ম-১৯৪৩) ফটিকছড়ির ধর্মপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেনএকজন গুণী শিক্ষাবিদ ছাড়াও তিনি গবেষণা কর্মেও লিপ্ত আছেনবেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন: জীবন ও কর্ম শিরোনামে বাংলা একাডেমী থেকে ৩৬৫ পৃষ্ঠার গবেষণা গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়বেগম রোকেয়ার উপর কিশোর জীবনীগ্রন্থও তিনি রচনা করেনশিক্ষা এবং গবেষণার ড. মুহাম্মদ শামসুল আলমের অবদান অপরিসীম

ফসর মনসুর মুসা (১৯৪৫)ঃ

তিন দশকের অধিককালে ধরে মননঋদ্ধ প্রবন্ধ ও গবেষণার ক্ষেত্রে বাংলা সাহিত্যে এক বলিষ্ঠ অবদান রেখে আসছেন প্রফেসর মনসুর মুসা (১৯৪৫)ফটিকছড়ির বর্ধিষ্ণু গ্রাম ধর্মপুরে তাঁর জন্মবর্ণাঢ্য কর্মজীবনের তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, বাংলা একাডেমীর মহা পরিচালকসহ অনেক প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেনবাংলা ভাষা ও সাহিত্যে তাঁর অনেক গবেষণা গ্রন্থ রয়েছেএখনো গবেষণারত প্রফেসর মনসুর মুসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভাষা ইনস্টিটিউটে এখনো প্রফেসর হিসেবে কর্মরত আছেন

সুব্রত বড়ুয়া (১৯৪৬)ঃ

দীর্ঘসময় বাংলা একাডেমীতে পরিচালক হিসেবে কর্মরত সুব্রত বড়ুয়া (১৯৪৬) ফটিকছড়ির চিলোনীয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেনবাংলা কথা সাহিত্য এবং প্রবন্ধ সাহিত্যকে হৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে তার অবদান অনেকখানিতার মৌলিক গ্রন্থ এবং বিজ্ঞানী কাহিনী  রয়েছেযা পাঠক মহলে সমাদৃতঅবসর জীবনেও তিনি লেখালেখিতে সক্রিয়

মুহাম্মদ ইদ্রিচঃ

মুহাম্মদ ইদ্রিচ ছিলেন একজন সাহসী এবং সৎ সাংবাদিকসাংবাদিতার পাশাপাশি তিনি দেশ ও সমাজ নিয়ে প্রতিনিয়তই ভাবতেন বলেই তিনি সমাজের নানা অনুসঙ্গ নিয়ে কলাম লিখতেনতিনি শুধুমাত্র লিখার মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনে থেমে থাকেননিসমাজ থেকে সন্ত্রাসকে সমূলে উৎপাটন করার জন্য তিনি জনগণকে নিয়ে রাস্তায় পর্যন্ত নেমেছেন এবং অনেকাংশেই সফলও হয়েছেদেশ এবং ফটিকছড়িবাসী সমপ্রতি হারিয়েছে এই মহান মানুষ মুহাম্মদ ইদ্রিচকে

কবি সাবিরিদ খানঃ

ফটিকছড়ির সর্বপ্রাচীন কবি সাবিরিদ খান ষোড়শতকের কোন এক সময় নানুপুরে জন্মগ্রহণ করেনতিনি জমিদার বংশে জন্মগ্রহণ করেছিলেনতাঁর পিতা নানুরাজার নামানুসারে বর্তমান নানুপুর গ্রামে নামকরণ করা হয়েছে বলে পন্ডিতজনেরা মনে করেনসাবিরিদ খানের এ পর্যন্ত খন্ডিত তিনটি পুঁথি আবিস্কৃত হয়েছে : ১বিদ্যাসুন্দর ২রসূল বিজয় ৩হনিফা ও কয়রাপরী

কবি মোহাম্মদ রজাঃ

ফটিকছড়ি থানার বক্তপুর ইউনিয়নে সপ্তদশ শতকের শেষ দশকে আর এক কীর্তিপুরুষ কবি মোহাম্মদ রজার সন্ধান পাওয়া যায়তিনি একজন বিদগ্ধ পন্ডিত ও লেখক ছিলেনতিনি সে সময় পাঁচটি উপাখ্যান কাব্য রচনা করেন

কবি মোহাম্মদ মুকিমঃ

অষ্টাদশ শতকের কবি মোহাম্মদ মুকিম ফটিকছড়ি থানার সুন্দরপুর ইউনিয়নের আজিমপুর গ্রামে স্থায়ী বসতি স্থাপন করেনতাঁর তথ্যমূলক অসাধারণ কাব্য গোলেবকাউলী চট্টগ্রামের ইতিহাসে অত্যন্ত মূল্যবান দলিল হিসেবে স্বীকৃত | কবি মোহাম্মদ আলীসহ এসব মধ্যযুগীয় কবিগণ সে সময় ফটিকছড়িতে জন্মগ্রহণ করেও পুরো মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের প্রতিনিধিত্ব করেনযা ফটিকছড়িবাসীর জন্য অনন্য গৌরবের বিষয়

জমিদার কবি হাসমত আলী (জন্ম-১৮৩২)ঃ

জমিদার কবি হাসমত আলী (জন্ম-১৮৩২) ফটিকছড়িতে জন্মগ্রহণ করেনতাঁকে মধ্যযুগের শেষ কবি এবং আধুনিক যুগের সন্ধিকালের কবিও বলতে পারিকারণ ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে রচিত তার বিখ্যাত চিনফকপুরসাহ কাব্যখানি আধুনিক যুগেরপ্রারম্ভিক পর্বে রচিত কবি হাসমত আলী ফটিকছড়ি থানার ভূজপুর ইউনিয়নের আজিমপুর গ্রামের কাজী বংশে জন্মগ্রহণ করেনজমিদার কবি এই ফটিকছড়িকে আরো সমৃদ্ধ করেছেন ঊনত্রিশটি সেতু নির্মাণসহ অনেক রাস্তাঘাট, হাটবাজার ও মসজিদ নির্মাণ করেন

সৈয়দ আবদুল ওয়ারেস (১৮৬৮-১৯২৮) ঃ

আধুনিক কালের প্রথম দিকে বাংলা গদ্যে মুসলমানদের অবদান ছিল খুবই সীমিতসেই সময়কালে চট্টগ্রাম থেকে যে দুচারজন মুসলিম মণিষী বাংলা ভাষায় আধুনিক প্রবন্ধ সাহিত্যে বিশেষ অবদানে রেখেছিলেন তাদের মধ্যে সৈয়দ আবদুল ওয়ারেস (১৮৬৮-১৯২৮) অন্যতমতিনি চট্টগ্রাম জেলার বৃহত্তর ফটিকছড়ি থানার অন্তর্গত ভূজপুর ইউনিয়নের আজিমপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেনসৈয়দ আবদুল ওয়ারেস সহজাত মেধা এবং সৃজনশীল ও মননশীল প্রতিভার অধিকারী ছিলেনতাঁর রচিত নীতি দর্পণ গ্রন্থটি সাহিত্য প্রতিভার উজ্জ্বল নিদর্শন১৯২২ সালে প্রকাশিত গ্রন্থটি তৎকালীন কলকাতার টেক্সটবুক কমিটি কর্তৃক ষষ্ঠ শ্রেণীর জন্য পাঠ্য ছিলচট্টগ্রাম জেলার মধ্যে সম্ভবত সৈয়দ আবদুল ওয়ারেসই প্রথম মুসলিম ব্যক্তি যিনি এই গৌরব অর্জন করেনতিনি মোক্তব বাল্য শিক্ষা নামে আরও একটি পাঠ্য বই রচনা করেনতখন শিশু শিক্ষায় এই বইটির বহুল প্রচলন ছিলতাঁর অমূল্য সাহিত্য কর্মগুলো আজ দুর্লভঅথচ এক সময় চট্টগ্রাম থেকেই সমগ্র বাংলা ভাষা-ভাষীর কাছে তাঁর সাহিত্য কীর্তি তুলে ধরেছিলেন আধুনিক সাহিত্যে ফটিকছড়ির এই মণিষী

ড. মুহাম্মদ এনামুল হক (১৯০২-১৯৮১)ঃ

বাংলা ভাষা-ভাষী যে কজন মণিষী আমৃত্যু নিরলস শ্রম আর মেধা দিয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন এদের মধ্যে ড. মুহাম্মদ এনামুল হক (১৯০২-১৯৮১) একজনবাংলা ভাষার উদ্ভব, বিকাশ ও বিবর্তন, বাংলা সাহিত্যে মুসলিম অবদানের বৈচিত্র্য, বঙ্গে সুফীগণের আগমন ও সুফীবাদের প্রভাবের ধারা, বাংলা ভাষায় প্রকৃত বাংলা ব্যাকরণ প্রণয়নের অসাধারণ পদক্ষেপ কতিপয় অমর মণিষীর চরিত্র ও কার্যকলাপ উদ্‌ঘাটনের মতো জটিল বিষয় নিয়ে মুহাম্মদ এনামুল হক যুগান্তকারী মৌলিক গবেষণা করেনএসব গবেষণা ছাড়াও তিনি একজন বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও প্রকাশক ছিলেনতার আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছে সমগ্র বাংলা ভাষাভাষী

মৌলবী বদিউল আলমঃ

ফটিকছড়িতে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারে এক অগ্রণী ভূমিকা পালন করে গেছেন মৌলবী বদিউল আলমতিনি দীর্ঘদিন শিক্ষার মতো মহান পেশাকে লালন করেছেন অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথেএই আর্দশ শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক দৌলতপুর ইউনিয়নের পূর্ব ফরহাদাবাদ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেনতাঁর রচিত চারটি কাব্যগ্রন্থ রয়েছেঅমৃত নির্ঝরকে তাঁর রচিত সাহিত্য সাধনার শ্রেষ্ঠ ফসল বলা যায়তদানীন্তন অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী মরহুম এ.কে. ফজলুল হককে এ কাব্যখানি উৎসর্গ করা হয়

চৌধুরী আহমদ ছফা (১৯৩০-২০০৮)ঃ

শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও গবেষক চৌধুরী আহমদ ছফা (১৯৩০-২০০৮) বৃহত্তর ফটিকছড়ির ভূজপুর ইউনিয়নের আজিমপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেনতিনি চার দশকের ও অধিককালে ধরে মহান শিক্ষকতা পেশাকে লালন করে গেছেন সযত্নেফটিকছড়ির শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে হৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে তার অবদান অসাধারণফটিকছড়ির প্রাচীন সাহিত্য ও ইতিহাস নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে গবেষণায় মেতে ছিলেন তিনিতাঁর গবেষণালব্ধ গ্রন্থ কালান্তর সাহিত্যে ফটিকছড়ির এক বিস্মৃত অধ্যায় (২০০১) সুধী সমাজে আলোড়িত হয়এছাড়াও তাঁর আরো উলে­খযোগ্য গবেষণা রয়েছেসৃজনশীল সাহিত্যের ক্ষেত্রেও তাঁর ব্যাপক পদচারণা রয়েছে১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করতে গিয়ে তিনি কারাবরণ করেন এবং পাকহানাদার বাহিনীর হাতে লাঞ্জিত হনএই কৃর্তি পুরুষ চৌধুরী আহমদ ছফার অবদান ফটিকছড়ির মাটি ও মানুষ চিরদিন স্মরণ করবে

উপাচার্য প্রফেসর মোহাম্মদ আলী (জন্ম ১৯৩৪) ঃ

কৃতিত্বপূর্ণ শিক্ষা জীবন শেষ করে একজন বরেণ্য শিক্ষাবিদ সফল প্রশাসক ছাড়াও লেখালেখির ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন ফটিকছড়ির কৃতি পুরুষ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য প্রফেসর মোহাম্মদ আলী (জন্ম ১৯৩৪) বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী প্রফেসর আলী ইংরেজী সাহিত্যে গবেষণার পাশাপাশি বাংলা সাহিত্যের দুই প্রধান পুরুষ হাসান হাফিজুর রহমান ও প্রফেসর সৈয়দ আলী আহসান এর কৃতিত্বপূর্ণ সাহিত্যিক অবদানকে বিশ্বসাহিত্যের দ্বারপ্রান্তে পৌছাতে পেরেছেনতিনি বর্তমানে একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে কর্মরত আছেন

মাহাম্মদ লোকমান (১৯৩৪-২০০৫)ঃ

 মার্কসীয় আদর্শে বিশ্বাসী মোহাম্মদ লোকমান (১৯৩৪-২০০৫) আমৃত্যু ফটিকছড়িতে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেনজীবনের দীর্ঘসময় তিনি ফটিকছড়িবাসীর পাশে থেকে সেবা দিয়ে গেছেনএকজন তাত্ত্বিক লেখক হিসেবেও তিনি সুপরিচিত ছিলেন । রোসাংগিরি গ্রামে জন্মগ্রহণকারী মোহাম্মদ লোকমানের প্রকাশিত গ্রন্থ রয়েছে পাঁচটি

প্রফেসর জামাল নজরুল ইসলাম (জন্ম ১৯৩৯)ঃ

পৈত্রিক সূত্র ফটিকছড়ির কৃতি সন্তান প্রফেসর জামাল নজরুল ইসলাম (জন্ম ১৯৩৯)চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভৌত গবেষক হিসেবে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন এই আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীবিজ্ঞান গবেষণার পাশাপাশি তিনি দেশের সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি, শিল্প, ধর্ম, দর্শন, সংগীত, চিত্রকলা, সাহিত্যসহ নানা অনুষঙ্গ নিয়ে কাজ করেছেনএই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী ফটিকছড়িবাসীর গর্ব

মওলানা সৈয়দ ফজলুল্লাহ আল মাইজভান্ডারী : জন্ম ১৯০৪ ইংরেজী/মৃত্যু ১৯৯৩ ইংরেজী

মওলানা শাহ ফজলুল্লাহ বি.টি. আল মাইজভান্ডারী ১৯০৪ ইংরেজীতে ফটিকছড়ির মাইজভান্ডার দরবার শরীফে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেনতিনি মহাকবি আলাওলের বড় ভাই শাহ ফরওয়ালের বংশ ধরতার পূর্ব পুরুষ ব্যবসা ও দ্বীন প্রচারের লক্ষ্যে এদেশে বসবাস করেনতার পিতা মাতার নাম যথাক্রমে মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ আবদুল­াহ ও সৈয়দা সালেহা খাতুন তিনি ১৯২২ সালে এফ.এম ১৯২৬ সালে বি.এ ১৯৩৪ সালে চি.টি কৃতিত্বের সাথে পাশ করেনতিনি ফটিকছড়ি করোনেশন হাই স্কুলসহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেনতিনি কংগ্রেস দলীয় সদস্য ছিলেন এবং মাওলানা আবুল কালাম আজাদের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেনপরবর্তীতে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সাথে সাক্ষাত করে মুসলিম লীগে যোগ দেনতিনি মাইজভান্ডার দরবার শরীফে একজন বিশিষ্ট খাদে ও সর্বজন স্বীকৃত শিক্ষাগুরু ছিলেনতিনি  ১৯৯৩ সালে ২৪ শে অক্টোবর ইন্তেকাল করেন

জহুরুল হক চৌধুরীঃ
জন্ম ১৯২৩ ইংরেজী /মৃত্যু ১৯৭০ ইংরেজী

বিশিষ্ট সমাজ সেবী জহুরুল হক চৌধুরী ১৯২৩ সালে ফটিকছড়ি দৌলতপুর গ্রামে এম সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেনবিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী আবদুল বারী চৌধুরী তাঁর পিতাতিনি ১৯৪৪ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এন্ট্রাস পাশ করেনতিনি অংকে, পালিতে ষ্টার মার্ক পেয়েছেনতিনি চট্টগ্রাম সরকারী কলেজ হতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করেবি.এস.সি-তে ভর্তি হনঅসুস্থতার কারণে পরবর্তীতে তিনি পরীক্ষা দিতে পারেন নিতিনি এ.কে. খান ম্যাচ কোম্পানী ডাইরেক্টর ছিলেনইহা ছিল পূর্ব পাকিস্তানে প্রথম বাঙ্গালী মালিকানাধীন ম্যাচ ফ্যাক্টরীতিনি ১৯৬৮ সালে নাজিরহাট হাসপাতাল, ১৯৬৩ সালে এ,বি,সি হাই স্কুল প্রতিষ্ঠা কােরনতিনি মাইজভান্ডার দরবার শরীফ ইন্নয়ন কমিটির সহ সভাপতি ছিলেনএছাড়া তিনি নাজিরহাট ডিগ্রী কলেজ, আহমাদিয়া মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেনতিনি ম্যাচ ম্যানুফেকচারীং এসোসিয়েশনের সহ সভাপতি ও ডেলিগেট হিসেবে জাপান সফল করেনতিনি মাতামুরী উড ওয়ার্কস লিমিটেডের সদস্য ছিলেনতিনি ১৯৭০ সালে ৮ই অক্টোবর ইন্তেকাল করেন

প্রফেসর আবুল মনসুর ফরজুল কবির
জন্ম ১৯১৭ ইংরেজী/মৃত্যু ১৯৮০

প্রফেসর আবুল মনসুর ফয়জুল কবির ১৯১৭ ইংরেজী ২৪শে জানুয়ারী ফটিকছড়ির জাহানপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহন করেনতাদের পূর্ব পুরুষ হলো জিন্দাপীর মুফতি গরীব উল­াহ (রা:) তিনি রাউজান হাই স্কুল, চট্টগ্রাম সরকারী কলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিম ছাতা্র সংসদের সম্পাদক ছিলেনতিনি কর্ম জীবনে কলিকাতা ইসলামিয়া কলেজ, চট্টগ্রাম সরকারী বাণিজ্য কলেজ, চট্টগ্রাম সরকারী কলেজে অধ্যাপনা করেনতিনি সরকারী চাকুরী ছেড়ে দিয়ে ১৯৫৪ ইংরেজীপাকিস্তান মুসলিম লীগে যোগ দেন এবং চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি নির্বাচিত হনতিনি চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের  ভাইস চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম কাউন্সিলার, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের কার্যকরী সদস্য ছিলেনতিনি ১৫ বৎসর ধরে ইউ পি চেয়ারম্যান ছিলেনতিনি নাজিরহাট ডিগ্রী কলেজ ও ইসলামীয়া কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেনতিনি ১৯৮০ ইংরেজীর ২৪ শে জানুয়ারী সড়ক দুর্ঘটনায় ইন্তেকাল করেন

আবুল কাশেম সওদাগর
জন্ম ১৯১৯ ইংরেজী/মৃত্যু ১৯৮৯ ইংরেজী

মরহুম আবুল কাশেম ১৯১৯ ইংরেজীতে ফটিকছড়ির নানুপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেনতাঁর পিতার নাম আলহাজ্ব আবদুল মান্নানস্থানীয় বিদ্যালয়ে তিনি লেখা-পড়া শেষ করে পৈতৃক ব্যবসা বাণিজ্যের হাল ধরেনতিনি বাংলাদেশ wU¤^vi মার্চেন্ট কন্ট্রোল বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, নানুপুর মান্নানিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা এবং বেঙ্গল টি ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড ও কাশেম ফিশিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ছিলেনকাঠ বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তৎকালীন সরকারের প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসাবে সফর করেনতিনি ১৯৮৯ সালে ইন্তেকাল করেন

আলহাজ্ব মোশরফ আলী সওদাগর
জন্ম ১৯২৫ ইংরেজী/মৃত্যু ১৯৮৩ ইংরেজী

আলহাজ্ব মোশারফ আলী সওদাগর ১৯২৫ ইংরেজীতে ফটিকছড়ি থানার ধর্মপুর গ্রামে এক  সম্ভ্রান্ত মুসলিম  পরিবারে জন্ম গ্রহন করেনতিনি ব্যক্তিগতভাবে একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ীসমাজ হিতৈষী ও শিক্ষানুরাগী ছিলেনতিনি চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটিয়া সড়কে সর্ব প্রথম লাক্সারী ডিজেল কোচ সার্ভিস প্রবর্তন করেনযা মোশাররফ আলী রোড নামে পরিচিতশিক্ষা সমপ্রসারণের লক্ষ্যে ধর্মপুর মোশাররফ আলী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেনতিনি চট্টগ্রাম রাঙ্গামটি সড়কে সর্বপ্রথম লাক্সারী ডিজেল কোচ সার্ভিস প্রবর্তন করেনযা মোশাররফ আলী রোড নামে পরিচিতশিক্ষা সমপ্রসারণের লক্ষ্যে ধর্মপুর মোশররফ আলী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেনতিনি চট্টগ্রাম শহরে ও ফটিকছড়িতে বিভিন্ন সেবামূলক সংগঠনের সাথে  ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেনতিনি ১৯৭৯ সালে হজ্ব পর্ব সমাধা করেন এবং ১৯৮৩ ইংরেজী ১৭ই আগষ্ট ইন্তেকাল করেন

আলহাজ্ব ডা: রহিম দাদ
জন্ম ১৯০৫ ইংরেজী / মৃত্যু ১৯৭৯ ইংরেজী

আলহাজ্ব ডা: রহিম দাদ ১৯০৫ সালে ১৩ই এপ্রিল ফটিকছড়ির ধর্মপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে দেওয়ান আলী মুন্সির বাড়ীতে জন্ম গ্রহন করেনতার পিতা মরহুম আবদুস সোবহান একজন বিশিষ্ট সমাজ হিতৈষী ছিলেনতাদের পূর্ব পুরুষ হযরত শাহ কুতুব (রা:) ব্যবসা ও ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে দীনা শরীফ হতে এখানে বসবাস করেনআলহাজ্ব ডা: রহিমদ দাদ কলিকাতা হোমিও মেডিকেল কলেজ হতে হোমিও ডিগ্রী লাভ করেনচট্টগ্রামের মোহসীন মাদ্রাসা হতে এন্ট্রাস পাশ করেনতিনি দেশের আজাদী আন্দোলনে অংশ গ্রহন করেন এবং ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য ছিলেনতিনি গরীব দু:স্থদের মিনামূল্যে চিকিৎসা ও ঔষধপত্র দিতেনমরহুমের স্ত্রী আলহাজ্ব আমাতুন নবী খানম একজন বিশিষ্ট শিক্ষিকা ছিলেন এবং ১৯৬২ সাল পূর্ব পাকিস্তানে শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকা হিসাবে পুরুষকৃত হনআলহাজ্ব রহিম দাদ ১৯৭৭ ইং সালে হজ্বব্রত পালন করেন এবং ১৯৭৯ ইংরেজীর ১৭ই মে ইন্তেকাল করেন

আহমদুল হক চৌধুরী
জন্ম ১৯১৫ ইংরেজী/মৃত্যু ১৯৬৬ ইংরেজী

বিশিষ্ট সমাজসেবী আহমুদুল হক চৌধুরী ১৯১৫ ইংরেজীতে ফটিকছড়ি ধুরুং গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেনতার পিতা চুন্নু মিয়া চৌধুরী একজন সমাজ হিতৈষী ব্যক্তি ছিলেনতাদের পূর্ব পুরুষ মরহুম হায়দার আলী চৌধুরী এলাকার এক কৃতিমান পুরুষ ছিলেনতিনি ফটিকছড়ি করোনেশন হাই স্কুল হতে এন্ট্রাস ও চট্টগ্রাম সরকারী কলেজ হতে কৃতীত্বের সাথে বি,এ ডিগ্রী লাভ করেনতিনি বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহন করেনএছাড়া এলাকা রশিক্ষা বিস্তারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেনতিনি বার্মার রেঙ্গুনে একজন বিশিষ্ট বাঙ্গালী ব্যবসায়ী ছিলেনতিনি চট্টগ্রাম খুলনা সমুদ্র পথে এয়াকুব চৌধুরী এণ্ড কোম্পানী নামে শিপিং ব্যবসার পথিকৃৎ ছিলেনতিনি ৮ ছেলে ও ২ মেয়ে রেখে ১৯৬৬ সালের ১০ শে অক্টোবর চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন




বদিউল আলম চৌধুরী
জন্ম ১৯১৯ ইংরেজী/মৃত্যু ১৯৯৪ ইংরেজী

বিশিষ্ট সমাজসেবী বদিউল আলম চৌধুরী ১৯১৯ ইংরেজীতে ফটিকছড়ি হাপানিয়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেনতার পিতা মাতার নাম যথাক্রমে আবদুর রশীদ চৌধুরী ও ফাতেমা খাতুনতিনি উত্তর ফটিকছড়িতে শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে নারায়হাট উচ্চ বিদ্যালয়, নারায়নহাট ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেনতিনি নারায়্‌নহাট ইউনিয়নের নয় বছর বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ছিলেনএলাকার সার্বিক উন্নয়ন কর্মচান্ডে তার দান অপরিসীমপরবর্তীতে দেশের স্বাধিনতা যুদ্ধে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেনবার্ধক্য জানিত রোগে তিনি ১৯৯৪ সালে ১০ শে জুলাই ইন্তেকাল করেন

কবি রাহাত বেগম
জন্ম ১৯১০ ইংরেজী, মৃত্যু ১৯৪৯ ইংরেজী

রাহাত আরা বেগম ১৯১০ সালে কলিকাতায় জন্মগ্রহন করেনতার পিতা ছিলেন শামছুল ওলামা কামাল উদ্দীনতিনি চট্টগ্রাম সরকারী কলেজের প্রথম ভারতীয় প্রিন্সিপালতিনি বহু বৎসর লক্ষ্ণৌ বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবী ও ফার্সীর প্রফেসর ছিলেনতার পিতা অর্থ্যাৎ রাহাত আরা বেগমের দাদা মৌলানা জুলফিকার আলীও একজন মশহুর আলেম ছিলেনরাহাত আরা বেগমের নানা ছিলেন নওয়াব আবদুল লতিফতাদের সঙ্গে শহীদ সোহরাওযার্দী পরিবারের আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিলরাহাত আরা বেগম কলকাতা সাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন এবং পরে লক্ষ্ণৌতে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করেনতিনি বাংলা, উর্দু, ইংরেজী ও ফার্সী ভাষাতে পারদর্শী ছিলেনচট্টগ্রামের কৃতি সন্তান সিরাজুল ইসলাম এম.এ.বি.এল এর সাথে তাঁর বিবাহ হয়সিরাজুল ইসলাম বিচার বিভাগে চাকুরী গ্রহন করেন ও আইন সচিব হিসাবে পদোন্নতি লাভ করেনতার জনহিতকর কাজের জন্য তাকে খান বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত করা হয়রাহাত আরা বেগমের গর্ভে খান বাহাদুর সিরাজুল ইসলামের আটজন সন্তান জন্ম গ্রহন করেনএদের মধ্যে চার জন ছেলে ও চার জন মেয়েতাদের বড় ছেলে ১৯৭৯ সানে এক দুর্গটনায় প্রাণ ত্যাগ করেনতাদের প্রত্যেক সন্তানই উচ্চ শিক্ষিতচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডক্টর জামাল নজরুল ইসলাম তাদের সন্তানদের একজনইনি একজন আর্ন্তজাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিজ্ঞানীরাহাত আরা বেগম ১৯৪৯ ইংরেজীতে মাত্র ৩৯ বৎসর বয়সে পরলোক গমন করেনরাহাত আরা বেগমের উর্দুতে অনুদিত রবি ঠাকুরের ডাকঘর উচ্ছুসিত প্রশংসার দাবী রাখেরাহাত আরা বেগম ও তাঁর ¯^vgx খান বাহাদুর সিরাজুল ইসলাম নাটকটি উর্দুতে অনুদিত হওয়ার পর ১৯২৭ ইংরেজীতে রবি ঠাকুরের কলিকাতাস্থ জোড়া সাকো নিবাসে গিয়ে রবি ঠাকুরের সঙ্গে দেখা করেনরবি ঠাকুর এতে খুশী হন এবং রাহাত আরা বেগমের ভূয়সী প্রশংসা করেনরাহাত আরা বেগম উর্দুতে বহু ছোট গল্প লিখেছেনসমপ্রতি নূতন দিল­ী হতে রাহাত আরা বেগম কী আফছানা নিগারী নাম করণে একটি গল্প সংকলন প্রকাশিত হয়েছে

ডা: তারেক মঈনুল ইসলাম
জন্ম ১৯৩৬ ইংরেজী/মৃত্যু ১৯৭৯ ইংরেজী

ডা: তারেক মঈনুল ইসলাম ১৯৩৬ সালে ২৬শে এপ্রিল ফটিকছড়ির শাহনগর গ্রামে সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেনতার পিতা ছিলেন বিশিষ্ট সমাজ সেবী খান বাহাদুর সিরাজুল ইসলাম ও মা ছিলেন বিশিষ্ট উর্দু কবি রাহাত আরা বেগমতিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল, চট্টগ্রাম কলেজ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ অব ওয়েষ্ট জার্মানীতে লেখা পড়া করেনপরবর্তীতে তিনি হোমিওপ্যাথিক উপর উচ্চ ডিগ্রীত লাভ করেনতিনি বিভিন্ন সেবামূল সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেনদেশের ¯^vaxbZv আন্দোলনে সর্বাত্মক সহযোগীতা দান করেনব্যক্তিগত ভাবে তিনি একজন গষেক, সমাজ হিতৈষী, সঙ্গিত প্রিয়, লেখক, শিক্ষানুরাগী ছিলেনতিনি ১৯৭৯ সালে ১৩ই অক্টোবর চট্টগ্রামের দেওয়ান হাট ব্রীজের এক সড়ক দুর্ঘটনায় ইন্তেকাল করেনতার স্ত্রী মিসেস দিলারা ইসলাম চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা এবং মেয়ে অধ্যাপিকা মাহে নুর কুদসী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী বিভাগে অধ্যাপনা করছেন

ভিক্ষু এইচ সুগত প্রিয়
জন্ম ১৯৫২ ইংরেজী/মৃত্যু ১৯৯৪ ইংরেজী

ভিক্ষু এইচ সুগত প্রিয় (গৃহী নাম-সুবাস চন্দ্র বড়ুয়া)
১৯৫২ ইংরেজীতে ফটিকছড়ি থানার হারুয়ালছড়ি গ্রামে সম্ভ্রান্ত বৌদ্ধ পরিবারে জন্মগ্রহন করেনতার পিতা মাতার নাম যথাক্রমে প্রয়াত অর্পন চরন বড়ুয়া ও প্রয়াত মান্দা বড়ুয়াতার ীক্ষা গরু ছিলেন প্রখ্যাত বৌদ্ধ দার্শনিক পন্ডিত ধর্মাধার মহাথেরদীক্ষা পন ১৯৭৯ ইংরেজী কলিকাতার ধর্মাকুব বিহারেতিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেনতিনি হারুয়ালছড়ি বৌদ্ধ সমাজ কল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা, জোবরা সুগত বিহার ও গুনালংকার অনাথ আশ্রমের পরিচালক, কদলপুর সুধামানন্দ বিহারের পরিচালক, আসন সেবক পালিক কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেনএছাড়াও বাংলাদেশ ভিক্ষু প্রশিক্ষণ ও সাধনা কেন্দ্রে মহা-পরিচালক মহামন্ডল কল্যাণ সংস্থার সহা সচিব ছিলেনতিনি ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ সরকারের যুব মন্ত্রণালয় হতে রাউজানের শ্রেষ্ঠ সমাজ কর্মী হিসেবে পদক পানতিনি ১৯৯৪ সালের ২৪শে অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন

আলহাজ্ব এম.এ. কবির
জন্ম ১৯৩৯ ইংরেজী/মৃত্যু ১৯৮৬ ইংরেজী

আলহাজ্ব এম.এ. কবির ১৯৩৯ সালে ফটিকছড়ির কাঞ্চন নগরে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম ব্যবসায়ী পরিবারে জন্মগ্রহন করেনতাঁর পিতার নাম হাজী হাফিজুর রহমানএম,এ কবির ১৯৫৭ সালে হাটহাজারীর ফতেয়াবাদ স্কুল হতে এন্ট্রাস পাশ করেনকর্মজীবনের শুরুতে পৈর্তৃক ব্যবসায়ে যোগ দেনপরবর্তীতে পাকিস্তান হয়ে দুবাই চলে যানসেখানে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে সফলতা লাভ করেন১৯৬১ সালে বিয়ে করেন১৯৭৬ সালে সফল ব্যবসায়ী হিসেবে দুবাই হতে দেশে প্রত্যাবর্তন করেনতিনি ব্যবসা বাণিজ্য উপলক্ষ্যে পৃথিবীর অনেক দেশে ভ্রমণ করেনমনসুর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আলমগীর কবির তার জেষ্ঠ্য পুত্রতিনি দেশে অনেক জনহিতকর কাজ করেনএ বিশিষ্ট সমাজসেবী ১৯৮৬ সালে ২৭শে জুলাই ইন্তেকাল করেন